সমুদ্র সীমানায় নিরাপত্তা, সম্পদ আহরণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চারটি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ শেষ হয়েছে। খুলনার খালিশপুরস্থ তিতুমীর নেভাল জেটিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে বুধবার নবনির্মিত জাহাজগুলো উদ্বোধন করবেন।
নিশান, দুর্গম, হালদা ও পশুর নামে জাহাজগুলো নির্মাণে ৯৪২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। খুলনা শিপইয়ার্ড আন্তর্জাতিকমানের এ যুদ্ধ জাহাজগুলো নির্মাণ করেছে।
নৌবাহিনীর সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। নির্মিত যুদ্ধ জাহাজগুলো পরীক্ষামূলকভাবে ভৈরব ও রূপসা নদীতে চলাচল করেছে। সম্প্রতি যুদ্ধজাহাজ বিএন দুর্গম বঙ্গোপসাগরে পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়।
খুলনা নৌবাহিনীর সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বুধবার বেলা ১১টায় খুলনার খালিশপুরস্থ তিতুমীর নেভাল জেটিতে নবনির্মিত দুর্গম ও নিশান নামের যুদ্ধজাহাজ এবং টাগবোট কমিশনিং করবেন। বেলা ১২টায় অনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্তকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।
খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (উৎপাদন) ক্যাপ্টেন এম নুরুল ইসলাম শরীফ জানান, প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর বঙ্গোপসাগরের বিশাল সমুদ্র এলাকা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখ্যযোগ্য অবদান রাখছে। সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তা, সম্পদ আহরণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে নৌবাহিনীর দায়িত্ব পালনের জন্য যুদ্ধজাহাজের বিকল্প নেই। সে কারণে ৬৪ দশমিক ২ মিটার দৈর্ঘ্য, ৯ মিটার প্রস্থ করে বিএন নিশান ও দুর্গম নামে দুটি যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ করা হয়। জাহাজ দুটি নির্মাণে ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। এই মানের জাহাজ বিদেশে তৈরি করতে এক হাজার কোটি টাকা খরচ হতো। জাহাজ দুটি নির্মাণে ২৪ মাস সময় লাগে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। যুদ্ধজাহাজ দুটি নির্মাণে চীন কারিগরি সহায়তা দিয়েছে। যুদ্ধজাহাজ দুটির প্রত্যেকটির ঘণ্টায় গতিবেগ ২৫ নটিকেল মাইল।
সূত্র জানান, ১৯৯৯ সালে ৩ নভেম্বর সরকার খুলনা শিপইয়ার্ডকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। তখন থেকে আন্তর্জাতিকমানের জাহাজ নির্মাণ কারখানা হিসেবে গড়ে ওঠে খুলনা শিপইয়ার্ড।
খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর আনিছুর রহমান মোল্লা জানান, খুলনা শিপইয়ার্ডে ২০১৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় দেশে জাহাজ নির্মাণের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। উদ্বোধনের পর ২৪ মাস অক্লান্ত পরিশ্রমে নির্মাণ শেষ হয়েছে দেশে নির্মিত প্রথম এন্টি-সাবমেরিন লার্জ পেট্রোল ক্রাফট দুটির।
খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের এলপিসি জাহাজ প্রকল্পের প্রধান কর্মকর্তা কমান্ডার এম আর রাশেদ বলেন, লার্জ পেট্রোল ক্রাফট হলেও এগুলোতে অধিকাংশ সুবিধা থাকবে। থাকবে স্বয়ংক্রিয় মিসাইলসহ অত্যাধুনিক সব যুদ্ধাস্ত্র। আরও থাকবে একটি মাল্টি রোল গান, একটি সিঙ্গেল ব্যারেল গান, দুটি ট্রিপল টুবার টর্পেডো লাঞ্চার, দু’টি নেভিগেশন রাডার, একটি এয়ার অ্যান্ড সারফেস সার্চ রাডার, একটি ট্রাকিং রাডার এবং একটি হাল মাউন্টেড সোনার। এই এলপিসি শত্রুপক্ষের সাবমেরিন শনাক্ত এবং তার ওপর আক্রমণ করতে সক্ষম।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply